Header Ads

কাফের বলার বিধান কি শিরক ও কূফর সর্ম্পকে আলোচনা..?

কুফর ঈমানের বিপরীত শব্দ। এটা মানুষকে তার মনুষ্যত্বের সীমারেখা থেকে হিংস্রতা,অকৃতজ্ঞতা,অভদ্রতা ও জাহেলীয়াতের অন্ধকারের দিকে ধাবিত করে। আর শিরক হলো সবচাইতে বড় জুলুম। এটা আল্লাহ ও মানুষের সর্ম্পক ছিন্ন করে,যার পরিনতি হয় অত্যন্ত ভয়াবহ। মুশরিকের জন্য পরকালে জাহান্নাম অবধারিত। নিন্মে এ ব্যাপারে আলোচনা করা হলো। কুফর ও শিরকের পার্থক্যঃ কুফর ও শিরকের মধ্যে অর্থগত ও মৌলিক কিছু পার্থক্য রয়েছে যেমনঃ #কুফরের আভিধানিক পার্থক্যঃ গোপন করা, অস্বীকার করার
গোপন করা বা ঢেকে রাখা। #শিরকের আভিধানিক পার্থক্যঃ শিকারের রশি, সমকক্ষ মনে করা সদৃশ করা আল্লাহকে কোনো কিছুর সাথে সমকক্ষ মনে করা। পারিভাষিক পার্থক্যঃ কুফরের পারিভাষিক সংজ্ঞায় তফসীরে বায়যাবী প্রণেতা বলেঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর আনীত বিধান অস্বীকার করাই কুফর। পক্ষান্তরে শিরকের পারিষাকি সংজ্ঞা হলোঃ শিরক হলো উলুহিয়াত ও রবুবিয়াতের ক্ষেত্রে কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা। বিধানগত পার্থক্যঃ ১। শিরক হলো “আম”(সর্বময়) ও কুফর হলো “খাস”(নির্ধারিত)। ২। মুশরিক আল্লাহর অস্তিত্বকে অবিশ্বাস করে না; বরং তার সাথে অন্যকেও অংশীদার সাব্যস্ত করে। পক্ষান্তরে কাফের আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে । ৩। শিরকে খফী বা আসগরের ফলে মুমিন কবীরা গুনাহকারী হয়,ঈমান থেকে বের হয়ে যায় না,পক্ষান্তরে কুফর কাউকে ঈমান থেকে বের করে দেয়। কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিকে কাফের বলার বিধানঃ কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিকে কাফের বলা হবে কিনা,এ বিষয়ে আলেমদের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। যেমনঃ ১। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অভিমতঃ আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের মতে,কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিতে কাফের বলা হবে না, বরং সে মুমিনে ফাসেক হিসেবে গন্য হবে। কাজেই সে খুলুদু ফিননার হবে না। যদি তাওবা ব্যতিত মারা যায়, তাহলে পাপ পরিমান শাস্তি ভোগের পর নাজাত পারে। ২। মুতাযিলাদের অভিমতঃ তাদের মতে, কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি কাফের ও হয়না আবার মুমিনও থাকে না। সে ঈমান ও কুফরীর মাঝামাঝিতে অবস্থান করে । অর্থাৎ- তার অবস্থান হলো এমন যে সে যদি তওবা ব্যতিত মারা যায় তাহলে জাহান্নামি হবে। ৩। খারেজীদের অভিমতঃ তাদের মতে, কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি কাফের হয়ে যায়। # বিরুদ্ধবাদীদের দলীলের প্রত্যুত্তরঃ ১। খারেজীদের দলীলেল প্রত্যুত্তরঃ # তারা যে আয়াতের কথা উল্লেখ করে সেই আয়াত দ্বারাপ সব বিধিবিধানকে অস্বীকার করা বোঝানো হয়েছে। আর যারা দ্বীনের সকল বিধিবিধানকে অস্বীকার করে ,তারা নিশ্চিতভাবেই কাফের হবে। # হাদীসে নামায পরিত্যাগের ব্যাপারে কঠোরতা ও ধমকিস্বরূপ এ কথা বলা হয়েছে। অথবা এর দ্বারা নামাজ অস্বীকার করা বোঝানো হয়েছে সুতরাং এ ব্যক্তিও কাফের হবে। কিবলার অনুসারীকে কাফের বলার বিধানঃ কোনো আহলে কিবলা তথা কিবলার অনুসারীকে কবীরা গুনাহের কারণে কাফের বলা যাবে কিনা এ ব্যাপারে ইসলামী চিন্তাবিদগনের নিকট থেকে তিন ধরনের অভিমত পাওয়া যায়। যথাঃ ক। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অভিমতঃ আহলে কিবলাকে কোনো গুনাহের কারণে কাফের বলা জায়েজ নেই। খ। মুতাজিলাদের অভিমতঃ এ বিষয়ে তাদের অভিমত হলো, কবীরা গুনাহের কারণে আহলে কিবলাকে কাফের বলা যাবে না, তবে সে মুমিনও নয়,বরং তার অবস্থান হলো সে যদি তওবা ব্যতীত মৃত্যুবরন করে তাহলে “জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে”। কোনো মুসলমানকে কাফের বলার বিধানঃ সকল ইমাম ও ফকীহ এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষন করেছেন যে, কোনো মুসলমানকে কাফের বলা যাবে না। যদি কোনো মুসলমান অপর মুসলমানের সম্পর্কে এ ধরনে র উক্তি করে , অথচ বাস্তবে সে কাফের না হয়, তাহলে উক্তীকারী নিজেই কাফের হিসেবে সাব্যস্ত হবে। শিরক হলো আল্লাহর অস্তিত্বের সাথে অণ্য কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করা। আর কুফর হলো আল্লাহর অস্তিত্বকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করা। যার অন্তরে আল্লাহর অস্তিত্বের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই,সেই প্রকৃত কাফের । আর তাই কবীরাহ গুনাহকারী কিবলার অনুসারী কোনো মুসলিমকে কাফের বলা জায়েয নেই।
Powered by Blogger.