পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের ঐতিহাসিক পটভূমি
পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের ঐতিহাসিক পটভূমি
প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর যে
রাত্রিতে মি’রাজ অনুষ্ঠিত হয় অর্থাৎ তিনি যে, রাত্রে মহান আল্লাহ
তায়ালার অসিম কুদরতে দুনিয়া থেকে সপ্তম আসমান পরিভ্রমণ করেন,বেহেস্ত-দোযখ অবলকন
করেন এবং মহান
আল্লাহ তায়ালার দীদার লাভ করেন,ঐ রাতে মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ
উপহার স্বরূপ দান করেন। প্রথমে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ নামাজ দান করেছিলেন। কিন্তু প্রিয়
নবী(সাঃ)স্বীয় উম্মতের দুর্বলতা জনিত কারনে কমাতে কমাতে অবশেষে পাঁচ ওয়াক্ত
নামা মঞ্জুর করিয়ে নিয়ে আসেন। প্রকৃত পক্ষে এ নামাজ সমূহের এক এক ওয়াক্ত
পূর্ববর্তী এক এক নবী(আঃ) এর উপর ফরয ছিল।কোন নবী(আঃ)এর উপর কোন নামাজ ফরয ছিল তা
নিম্নে বিবরন দেয়া হলোঃ-
ফজরঃ প্রথম পয়গম্বর আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) যখন বেহেস্ত হতে দুনিয়ায়
প্রেরিত হয়েছিলেন,তখন দুনিয়া ছিল গভির অন্ধকার।এতে তিনি মহাসংকটে পড়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ়
হয়ে সারা রাত কেঁদে কাটালেন।তারপর যখন রাতের অন্ধকার দূর হয়ে ভোরের আলো প্রকাশ
পেল, তখন তিনি মহান আল্লাহ পাকের শাহী দরবারে শুকরিয়া স্বরূপ দুই রাকাত নামাজ আদায়
করলেন। এ দুই রাকাত নামাজই ফজরের ফরজ নামাজরুপে পরিগণিত হয়েছে।
যোহরঃ মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ)নিজের পুত্রকে নিজে কোরবানী
করতে মনোবল না হারানোর কারনে এক রাকাত,পুত্রের মায়া মন থেকে দূর করতে পারার কারনে
এক রাকাত,হযরত ইসমাইল (আঃ)মহান আল্লাহর নির্দেশ পালনে বাধ্য থাকার কারনে এক
রাকাত,হযরত ইসমাইল (আঃ)এর পরবর্তীতে
দুম্বা কোরনানি হয়ে যাওয়ার কারনে এক রাকাত, মোট এ চার রাকাত নামাজ শুকরিয়া স্বরূপ
আদায় করেছিলেন। এ চার রাকাত নামাজই যোহরের ফরজ হিসাবে গণ্য হয়েছে।
আছরঃ হযরত ইউনুস (আঃ) বিরাট এক সামুদ্রিক মাছের পেটে আবদ্ধ হয়েছিলেন,সে
অন্ধকার থেকে মুক্তি লাভের জন্য মাছের পেটে প্রবেশ করার সময় গভীর অন্ধকার ছিল ঐ
অন্ধকার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সাগর বক্ষের পানি রাশিও থেকে মুক্তি লাভের জন্য
এবং মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর অপরাধ মার্জনা করে দেওয়ার জন্য মোট চার রাকাত শুকরিয়া
নামাজ আদায় করেন ।এই চার রাকাত নামাজই আছরের ফরজ নামাজ হিসাবে গন্য
হয়েছে।
মাগরিবঃ হযরত ঈসা (আঃ)নিজে খোদা না হওয়ার নিদর্শন স্বরূপ এক রাকাত,তাঁর মাতা
বিবি মরিয়ম (আঃ)খোদা না হওয়ার নিদর্শন স্বরূপ এক রাকাত,একমাত্র মহান আল্লাহ
তায়াকেই খোদা স্বীকারের নিদর্শন স্বরূপ এক রাকাত, এ তিনটি কারনে তিনি তিন রাকাত
নামাজ আদায় করেছিলেন।পরবর্তীতে এ তিন রাকাত নামাজই মাগরিবের ফরয নামাজ হিসাবে গন্য
হয়েছে।
ইশাঃ হযরত মূসা(আঃ) ফেরাউনের হাত থেকে মুক্তি লাভের জন্য এক রাকাত,নীলনদ
থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এক রাকাত অবাধ্য ইসরাইলদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এক
রাকাত,এবং ফেরাউন এবং তার বাহিনি নীলনদে ডুবে ধ্বংস হওয়ার জন্য এক রাকাত মোট চার
কারনে চার রাকাত নামাজ আদায় করে ছিলেন। এই চার রাকাত নামাজই ইশার চার রাকাত
ফরজ নামাজ হিসাবে গন্য হয়েছে।
বেতেরঃ প্রিয়নবী মুহাম্মদ(সাঃ) শব-ই মেরাজে যখন সফরে বের হন,তখন হযরত মুসা
(আঃ)এর সাথে দেখা হলে তিনি প্রিয়নবী(সাঃ)কে সিদরাতুল মুনতাহায় পৌছে তাঁর জন্য এক
রাকাত নামাজ আদায়ের অনুরোধ করেন। সেখানে পৌঁছে তিনি হযরত মুসা (আঃ) এর জন্য এক
রাকাত নামাজ আদায় করেন।নিজের জন্য মতান্ততে পীতার জন্য এক রাকাত নামাজ আদায় করেন।
এ সময় আল্লাহ পাক তাঁকে এক রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশ দেন। তিনি সে রাকাতও আদায়
করেন। অতএব, কারো মতে এ নামাজ প্রথম রাকাত ওয়াজিব,দ্বিতিয় রাকাত সুন্নাত,তৃতীয়
রাকাত ফরজ । একত্রে তিন রাকাতই ওয়াজিব হিসাবে নির্ধারিত হয়েছে।