Header Ads

জাকির নায়েক কোথায় পেলেন এত টাকা যা দিয়ে Peace tv চলতেছে ???

জাকির নায়েক কোথায় পেলেন এত টাকা যা দিয়ে Peace tv চলতেছে ???
---------------------------------------
বর্তমানে ইসলামিক রিসার্স ফাউন্ডেশন (আই আর এফ) তাদের সালাফী মতবাদ প্রচার প্রসারের জন্য যে মাধ্যমটি সবচেয়ে বেশী ব্যবহার করছে তা হলো পিস্‌ টিভি । পিস্‌ টিভি একটি ক্যাবল টিভি মাধ্যম যেখানে নিয়মিত বক্তৃতা প্রচার করা হয় । এর আগে তারা সালাফী মতবাদ প্রচারের জন্য প্রায় হাজার খানিক প্রচারককে প্রশিক্ষন দিয়েছে যারা ইসলামের নামে তাদের সালাফী মতবাদকে প্রচার করছে ।
পিস্‌ টিভির যাত্রা শুরু ২০০৬ সালের জুলাই মাসে এবং এটি প্রচারে নিয়োগ রয়েছে সৌদি আরবের স্যাটেলাইট ‘স্যাটেলাইট BADR-3’. যাত্রা শুরুর মাত্র ১ মাস পরেই ‘স্যাটেলাইট BADR-4’ এবং ‘BADR-C’ ও পিস্‌টিভির প্রচারকার্যে নিয়োগ করে সৌদিআরবের ArabSat কোম্পানী [1][2] । ২০০৭ সালে ‘PanAmSat PAS-10’ স্যাটেলাইটও একই সেবা দিতে শুরু করলো ।

শুরুর দিকে সবগুলো প্রোগ্রামই ইংরেজীতে প্রচার হতো । ২০০৯ সালে উর্দূতে পিস্‌ টিভির প্রচার শুরু হয় । সর্বশেষে ২০১১ সালের ২২শে এপ্রিল বাংলাতে পিস্‌ টিভি উন্মুক্ত করা হয় । অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্যমতে পিস্‌ টিভি এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, অষ্ট্রেলিয়া ও উত্তর আমেরিকা সহ বিশ্বের মোট ১৫০ টি দেশে প্রায় ৫০ মিলিয়ন দর্শক বিনামূল্যে টেলিভিশনের পর্দায় এই চ্যানেল দেখতে পারে ।
এরকম একটি আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেল চালাতে কি রকম ব্যয় হতে পারেঃ
১) সেট আপের খরচ (জমি, বিল্ডিং এবং অন্যান্য স্থাপনা)
২) এসটাব্লিশ্মেন্ট খরচ
৩) বিভিন্ন হাই কোয়ালিটি যন্ত্রপাতি
৪) প্রতিটি অনুষ্ঠানকে তৈরির জন্য ব্যয়
৫) অনুষ্ঠান উপস্থাপক, পরিচালক, লেকচারার, বিভিন্ন পদের ব্যাক্তিকে বেতন ও ভাড়ার খরচ
৬) বার্ষিক খরচ, ষ্টেজ এর খরচ
৭) অন্যান্য খরচ
ইয়াহুতে এক প্রশ্ন করা হয়, যেখানে বলা হয় ইন্টারন্যাশনাল এরকম একটি টিভি চ্যানেল শুধুমাত্র শুরু করতে মোটামুটি কত খরচ হতে পারে । সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত সঠিক উত্তরটিতে বলা হয়,
কমপক্ষে আধা বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন । শুরুতে মেশিনারিজ ক্রয়ের এই ব্যায়ের ছাড়াও রয়েছে প্রদর্শনের খরচ, চ্যানেলের বহু কর্মকর্তা কর্মচারির পেছনে খরচ এবং আপনাকে স্যাটেলাইট গুলো ভাড়া নিতে বহু বহু খরচ করতে হবে । [3]
তাঁর মানে দাঁড়াচ্ছে মোটামুটি এক বিলিয়ন ডলার লেগে যাবে শুধু মাত্র এরকম মানের একটা চ্যানেল শুরু করতে । যার পরিমান বাংলাদেশি টাকায় আট হাজার কোটি টাকা ।
টিভি চ্যানেলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্য্যবহুল টিভিচ্যানেল যেমন বিবিসি, সিএনএন ইত্যাদি চ্যানেলগুলোর বার্ষিক ব্যয় এক বিলিয়নেরও বেশি । এসব তথ্য আপনি পাবেন সেইসব চ্যানেলের নিজস্ব ওয়েবসাইটে । পিসটিভির তিনটি টিভি চ্যানেল ইংরেজী, ঊর্দূ ও বাংলা । প্রতিটিতে যদি ৩০ মিলিয়ন ডলার বার্ষিক খরচও ধরা হয় তাহলেও পিস্‌টিভির ব্যয়ভার প্রতি বৎসরে ৯০ মিলিয়ন ডলারের মত । বাংলাদেশী টাকায় যার পরিমান প্রায় সাত শত বিশ কোটি টাকা । আপনারা হয়তো খেয়াল করেছেন পিস্‌টিভি কতটা বিলাশী ভাবে অনুষ্ঠানগুলো পরিচালনা করে থাকে ।
টিভি চ্যানেল চালানোর পাশাপাশি পিস্‌ স্কুল, পিস্‌ কলেজ, পিস হাসপাতাল চালানো হচ্ছে ব্যাপক হারে । চলছে বিভিন্ন সালাফী প্রশিক্ষণকেন্দ্র যেখানে প্রকাশ্যে সালাফী মতবাদ প্রচার করা হচ্ছে ।
Contents [hide]
1 জাকির নায়েকের ব্যায়ের হিসাব গননার বাইরে
2 জাকির নায়েকের এত টাকার উৎস কোথায় ?
3 জাকির নায়েকের অর্থের মূল উৎস সৌদি আরব
4 কেন সৌদিআরব জাকির নায়েককে এত বেশি পরিমান অর্থ যোগান দিবে ?
5 জাকির নায়েক একা নন
6 তথ্যসূত্র
জাকির নায়েকের ব্যায়ের হিসাব গননার বাইরে
সম্প্রতি জাকির নায়েক ঘোষনায় বলেছেন তিনি আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্ক স্থাপন করতে যাচ্ছেন । অন্যান্য আন্তর্জাতিক ব্যাংক যেমন বিএনপি (মোট প্রোপার্টি ৩.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার), আরবিএস (মোট প্রোপার্টি ২.৯৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার), বার্কিলিস (মোট প্রোপার্টি ২.৫৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার), এইচ এস বি সি (মোট প্রোপার্টি ২.৪২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার) এইসব ব্যাঙ্কের সমান না হোক অন্ততঃ কাছাকাছি পরিমান প্রোপার্টি জাকির নায়েকের ব্যাঙ্কে থাকবে তা বলে দেয়া যাচ্ছে । কারন জাকির নায়েকের এ পর্যন্ত ব্যায়ের হিসাব অন্ততঃ সে হিসেবটিকেই আরো পাকাপোক্ত করছে । পাঠকদের স্বরণ করিয়ে দেয়া হচ্ছে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার = ১০০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার = ১০০০,০০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার = ১,০০০,০০০,০০০,০০০ ডলার = ৮০,০০০,০০০,০০০,০০০ টাকা । আমি হিসেব করছি না । পাঠকগণ আপনারাই হিসাব করুন যে কত শত বছর বাংলাদেশের বার্ষিক বাজেট এই টাকায় পার হয়ে যাবে ।
আমরা অন্ততঃ এতটুকু বলতে পারি যে, জাকির নায়েকের টাকার স্রোত আমাজন নদীর পানির স্রোত মোটামুটিই একই রকম । এবার আমরা আসি দ্বিতীয় প্রশ্নে ?
জাকির নায়েকের এত টাকার উৎস কোথায় ?
২০১০ সালে পিস্‌ কনফারেন্স (সোমাইয়া গ্রাউন্ডে)
মুম্বাইয়ে সোমাইয়া গ্রাউন্ডের স্যাটেলাইট দৃশ্য
জাকির নায়েক দাবি করেন যে তাঁর আর্থিক যোগান হচ্ছে যাকাতের টাকা থেকে । কিন্ত পাঠকদের মনে প্রশ্নঃ কোন ব্যক্তি এরকম আছে; যে কিনা প্রতি বৎসর এক বিলিয়ন ডলার থেকেও বেশি টাকা যাকাত প্রতি বছরই জাকির নায়েককে দিয়ে যাচ্ছেন !! ব্যাপারটা নিতান্তই ভ্রু কুঁচকে যাবার মত ব্যাপার । চেষ্টা করেও হিসাব মিলানো যাবে না তা পরিষ্কার । হিসেব করে বলে দেওয়া যায় তাঁর প্রাপ্য যাকাতের অর্থ এবং বর্ক্তৃতার মাধ্যমে তাঁর বার্ষিক আয় ৫ মিলিয়ন ডলারের বেশী কখনই হয় না । তাহলে কোথা হতে বানের পানির মত অর্থ জাকির নায়েককে দেয়া হচ্ছে ?
ব্যায়ের টাইমলাইন

(১)
পিসটিভি সর্বপ্রথম রেজিষ্টার করা হয় দুবাইতে । এরপর ব্রিটেনে । জাকির নায়েক বলে থাকেন রেজিষ্ট্রেশন তাঁর নিজের নামে করা নেই । অন্য কারো নামে করা আছে । কিন্তু আমরা দেখে থাকি পিস্‌ টিভি পরিচালনা থেকে শুরু করে এর প্রচার প্রসার ব্রডকাষ্টিং এর সবকাজ জাকির নায়েকের তত্তাবধানেই হয়ে আসছে ।
(২)
২০০৭ সালে সৌদি আরব থেকে জাকির নায়েকের দুইটি বই প্রকাশ করা হয় । প্রকাশনীর নাম দারুস সালাম এবং বইদুইটির নাম "The Concept of God in Major Religions" and "The Qur'an & Modern Science: Compatible or Incompatible?"
(৩)
গত চার বছর ধরে জাকির নায়েক প্রতিবছর ১০ দিনের সম্মেলন করছেন সোমাইয়া গ্রাউন্ডে, যেখানে প্রতি বছর ব্যয় করা হচ্ছে কয়েকশ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ।
(৪) সোমাইয়া গ্রাউন্ডে বিলাশ বহুল পিস্‌ কনফারেন্স
২০১০ সালে এই কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় ২২-৩১ অক্টোবর (মোট ১০ দিন)। মোট ৩৫ একর জমির উপর এই কনফারেন্স হয় । ঠিকনা Somaiya Ground, Off Eastern Express Highway, Sion Mumbai, India । সোমাইয়া গ্রান্ডের মালিক বর্গের নাম সোমাইয়া এডুকেশন সোসাইটি । তাদের মোবাইল নম্বর 91-22-24080331 । আপনার ফোন দিয়ে খোঁজ নিতে পারেন । সে বছর জাকির নায়েক বেশ বিলাশীভাবেই পুরো অক্টোবর মাস জুড়ে সোমাইয়া গ্রাউন্ড ভাড়া নিয়ে নেন । সোমাইয়া গ্রাউন্ডের তখন ভাড়া ছিল ১-২ মিলিয়ন ডলার প্রতি দিনের জন্য (যদিও এই হিসেব তাদের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে না, তবে আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন) । এখন পুরো মাসের ভাড়ার হিসাব পাঠকবৃন্দের হাতে রইল ।
দশ দিনের সেই কনফারেন্সে প্রতিদিন স্টেইজটি সাজানো হয় ভিন্ন ভিন্ন রুপে । বিলাশী ও অত্যন্ত চমকপ্রদ, ৫০০০ বর্গফুটের সেই আলোকসজ্জা ও জাকজমক এবং টেকনোলজীর ব্যবহার আমাদেরকে বেইজিং অলিম্পকি স্টেডিয়াম এবং ভারত কমনওয়েলথ গেমসের সাজসজ্জার কথা মনে করিয়ে দেয় ।
পিস্‌ কনফারেন্সের দর্শকদের জন্য ছিল ফাইভ ষ্টার কোয়ালিটির আতিথেয়তা । জাকির নায়েক সেবার বলেছিলেন যে প্রায় ২০০০ কর্মীকে তিনি নিয়োগ দিয়েছিলেন শুধু ঐ ১০ দিন পর্যালোচনা করার জন্য ।
লাখো দর্শকদের জন্য ছিল A-Class মানের বসার ব্যবস্থা ।
টেকনোলজীর কথা যদি বলতে হয় । ঐ কনফারেন্সে ব্যবহার করা হয় ৪৫ টি Digital Beta cam, High Definition 4:4:4 ক্যামেরা, ১৫ টিরও বেশি Jimmy Jibs যাদের উচ্চতা ৪০ ফিটের মত, Akela Cranes গুলো ছিল ৮০ ফিট উচ্চতার এবং ছিল আরো অত্যধুনিক মিডিয়া টেকনোলজী ।
প্রায় কয়েক হাজার দর্শকের জন্য করা হয় উন্নত মানের খাবারের আয়োজন । সাথে ছিল স্ট্যান্ডার্ড পরিবেশে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা । দূর থেকে যারা আসবেন তাদের জন্যও ছিল বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থা । কারণ কনফারেন্সের জায়গাটি মুম্বাইয়ের কেন্দ্র থেকে বেশ দূর । আপনি বিনা খরচে থাকতে পারবেন সেখানে পুরো কনফারেন্সের ১০ দিন । টাকার চিন্তা আপনার করতে হবে না । সব ব্যবস্থা জাকির নায়েকের ।
শুধু তাই নয়; যারা ভি আই পি দর্শক তাদের জন্য বিলাশ বহুল হোটেলের ব্যবস্থা করা হয় । থাকা খাওয়া এমনকি বিমান টিকেট নিয়েও চিন্তা করতে হবে না ।
৩০,০০০ বর্গফুট এলাফা সম্পূর্ন এয়ার কন্ডিশন করা । কনফারেন্সের জন্য থাকে ৩০০ টি প্যানেল এবং ৫০ টি মডেল ডিস্প্লে ।
কনফারেন্সে গেষ্ট হিসেবে আসেন অনেক খাবারের কোম্পানী; যারা তাদের হালাল খাবার সরবরাহ করেন । দাওয়াত দেওয়া হয় বিনিয়োগকারীদের, কস্মেটিক কোম্পানী, ক্রেতা, বিক্রেতা, বিত্তশালী ব্যবসায়ী এমনকি সরকারী এবং বেসরকারী উচ্চপদস্থ বহু ব্যক্তি বর্গকে আমন্ত্রন দেওয়া হয় । আপনারা হয়ত বুঝতে পারছেন; আমাদের দেশের ইন্টারন্যাশনাল মেলাগুলোতেও এত আয়োজন করা হয় না ।
কনফারেন্স উপলক্ষে ছোট বড় মিলিয়ে ৭৮ টি বিজ্ঞাপন দেয়া হয় ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকাগুলোতে; যার খরচ প্রায় ৭০ লক্ষ রুপি । এশুধু এক ভারতেই বিজ্ঞাপনের ব্যয় । অন্য দেশে বিজ্ঞাপন দিতে কত খরচ হয়েছে তাঁর বিবরন তাঁর ওয়েবসাইটে পাওয়া যায় না ।
কনফারেন্সে হারাম শরীফের ইমাম এবং সৌদি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকেন ।
কনফারেন্সের যাত্রা শুরু ২০০৭ সাল থেকে । তখন থেকেই প্রতি বছর এই বিপুল ব্যয় জাকির নায়েক করে যাচ্ছেন । কত বিলিয়ন ডলার ব্যয় হচ্ছে আর কত ভবিষ্যতে হতে থাকবে এ সম্পর্কে হিসেব করে বের করাটা বেশ কঠিন বলেই মনে হচ্ছে । কিন্তু এত অর্থের উৎস কোথায় ? চলুন সেটাই জানা যাক ।
জাকির নায়েকের অর্থের মূল উৎস সৌদি আরব
বাদশাহ আব্দুল্লাহ
২০১০ সালে কনফারেন্সের শেষ দিন ৩১ শে অক্টোবর জাকির নায়েক লেকচারে বলেন - সৌদি আরবের বাদশাহরর সাথে তাঁর ঘনিষ্টতা রয়েছে । সেখানে তিনি বলেন কিভাবে ভারতে অবস্থানরত সৌদি দূতাবাস থেকে সৌদি কর্মকর্তাদেরকে কনফারেন্সের জন্য নিমন্ত্রন জানানো হয় । তিনি আরো বলেন সৌদি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারাও যেন কনফারেন্সে আসতে পারেন এজন্য সৌদি বাদশাহ তাঁর নিজ স্পেশাল বিমানেরও ব্যবস্থা করে থাকেন ।[4]
সৌদি গ্রান্ড মসজিদের ইমামগণের সাথেও জাকির নায়েকের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে তিনি জানান । উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, যেকোন সৌদি গ্রান্ড মসজিদের ইমামকে কনফারেন্সে যোগদানের পূর্ন এখতেয়িয়ার জাকির নায়েককে দেয়া হয়েছে । সর্বপ্রথম মুফতি সুদাইসকে জাকির নায়েক ডেকে পাঠান কনফারেন্সে । কিন্তু একান্ত কারণবশতঃ মুফতি সুদাইস সেবার যোগদান করতে পারেন নি । রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে সেবার মুফতি সুরাইস যোগদান করে কনফারেন্সে ।
এটা সুষ্পষ্ট যে জাকির নায়েকের কনফারেন্সকে আরো বিখ্যাত করার জন্য সৌদি আরব সরকার একান্ত নিবেদিত । এজন্য চাওয়ার আগেই সবকিছু যেন হাতে এসে যাচ্ছে জাকির নায়েকের । একথা সর্বজনবিদিত যে, বিলিয়ন ডলার সৌদি সরকারের কাছে তেমন কোন বড় পরিমানের কোন অর্থ নয় যতটুকু আমাদের কাছে বড় বলে মনে হয় । আর এও প্রমাণিত; শুধু অর্থ নয় সৌদি মদদে প্রাপ্ত ক্ষমতার সিংহাসনও এখন জাকির নায়েকের দখলে।
কেন সৌদিআরব জাকির নায়েককে এত বেশি পরিমান অর্থ যোগান দিবে ?
এখন প্রশ্ন ঘুরে যাচ্ছে এদিকে - কেন সৌদিআরব প্রতি বছর জাকির নায়েককে এই বিপুল পরিমান অর্থ যোগান দিবে । কারন আমরা এটা পরিস্কার দেখে থাকি যে সৌদি পরিবার কখনই ইসলামের প্রতি অনুগত নয় যতটা অনুগত পাশ্চাত্যের খেদমতে । এবং এটাও আমরা জানি সৌদিরা ওহাবী/সালাফী মতবাদে বিশ্বাসী । ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় জাজিরাতুল আরবের মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে একদল কট্টর সালাফী/ওহাবী জাজিরাতুল আরব দখল করে । পরবর্তিতে দেশের নাম পরিবর্তন করে তাদের নেতা সৌদের নামে দেশের নাম 'সৌদিআরব' রাখা হয়েছে ১৯২৫ সালে। এবং ইসলামী খিলাফত কে নিষিদ্ধ করে সেখানে রাজ্যপ্রথা চালু করা হয় যা ইসলামে আদৌ গ্রহণযোগ্য নয় । এজন্য সৌদি আরব কখনোই মুসলমানদের উপর নেতৃত্ব করতে পারছে না আর তাদের সালাফী মতবাদ ও তাদের অতীত ইতিহাস এ অক্ষমতাকে আরো দৃঢ় করেছে । এ থেকে পরিত্রান পাবার উপায় একটিই । তা হলো ইসলামের বিকৃত রুপ তথা বৃটিশ মদদপ্রাপ্ত সালাফী মতবাদকে মুসলমান বিশ্বে প্রচার করতে হবে এমনভাবে যেন সালাফী মতবাদকেই লোকে ইসলাম বলে মনে করে । এখন আমাদের গন্তব্য সহজ হয়ে গেল । আলোচনা থেকে এটি খুবই সুষ্পষ্ট যে জাকির নায়েকের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো সৌদি সালাফী মতবাদকে ইসলাম ধর্ম বলে ব্যাপক প্রচার ও প্রসার করা । এতে তাৎক্ষনিক না হোক ১ যুগ পরে হলেও ভারতীয় উপমহাদেশ সহ সারা বিশ্বে লোকে ইসলাম বলতে সালাফী মতবাদকেই মেনে নিবে ।
জাকির নায়েক একা নন
বায়তুল হারামের ছবি রয়েছে সৌদি রিয়ালে
জাকির নায়েক প্রকৃতপক্ষে একটি সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার একটি অংশ । এর পূর্বেও সালাফী মতবাদ প্রচারের জন্য অনেকেই কাজ করেগেছেন সৌদিআরবের পক্ষে । উদাহরণস্বরূপ ইবন আব্দুল ওয়াহহাব নজদীর (১৭০৩-১৭৯২) নাম উল্লেখ করা যেতে পারে, যিনি বৃটিশদের দাসতুল্য বাদশাহ সৌদের সালাফী মতবাদকে নজদের বাইরে প্রচারের জন্য ব্যাপক প্রচার করেছেন সেই যুগেই । ইবন আবুদল ওয়াহহাব সাধারন জনগনের মধ্যে সালাফী মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নিয়োজিত ছিলেন । এই মতবাদে বিশ্বাসী জনসাধারনই পরবর্তীতে বাদশাহ সৌদের সাথে যোগ দেয় যার ফলে মুসলমানদের বিশাল আরব সম্রাজ্য দখল করা খুবই সহজ হয় সৌদের জন্য । অবশ্য এজন্য বেশ মোটা অঙ্কের অর্থ ও পুরস্কারও পেয়েছিলেন ইবন আব্দুল ওয়াহহাব । ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় সম্ভবতঃ ঠিক একারনেই ইবনে আব্দুল ওয়াহহাবের পুত্রদেরকেই সৌদিআরবের মন্ত্রিত্বের ও গ্রান্ড মুফতীর মত সম্মানজনক পদে অধিষ্ঠিত করা হয় ।
সৌদি প্রিন্স রিয়ালের খাঞ্জা উড়াচ্ছেন একজন অশ্লীল নর্তকীর উপর । মুদ্রাগুলোতে রয়েছে বায়তুল মুকাদ্দাস, বায়তুল হারাম সহ সম্মানিত মসজিদের ছবি যেগুলো পায়ের নিচা চাপা পড়ছে
বেশ অনেক বছরই সালাফী মতবাদ আরব অঞ্ছলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল । কিন্তু সম্প্রতি এ মতবাদকে আরবের বাইরে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্ছলে প্রচার করার পরিকল্পনা নেয় সৌদি সরকার । তাঁর ফলশ্রুতিতে সৃষ্টি জাকির নায়েক সহ হাজার খানিক সালাফী প্রচারকের । এর প্রমাণ স্বরূপ আমরা দেখতে পাই; জাকির নায়েক তাঁর কোন লেকচারেই এমনকোন বিষয়ে কথা বলেন না যা তাঁর প্রভু সৌদিআরবের বিপক্ষে চলে যায় । সৌদি আরবে যেসব অনৈসলামিক রীতিনীতি চলছে তাঁর কয়েকটি উল্লেখ করার মতঃ খিলাফতের বদলে চলছে রাজতন্ত্র; চলছে আধুনিক দাসপ্রথা; যে এলেম অর্জন করা প্রত্যেক নরনারীর জন্য ইসলাম ফরজ সেই এলেমের গন্ধটুকুও সৌদিআরবে নেই, বরং সাধারন শিক্ষিত লোকের হার মাত্র ২০%, সৌদি প্রিন্সরাও অশিক্ষিত । যে কয়েকজন শিক্ষিত হয়েছে তাও পড়াশুনা করেছে পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, যার ফলে তাদের অসভ্য বেদুইন পোশাকের ভিতরে ইসলামের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া বড়ই মুসকিল;প্রিন্সরা কেমন চলছে তাঁর একটি ভিডিও এই পেইজের ডানপাশে রয়েছে । চলছে মদ্যপান; এমনকি আইয়ামে জাহেলিয়াতের মত নিজের কন্যাকে ধর্ষনের জন্য তাঁর পিতাকে সামান্য কিছু রিয়লাদের জরিমানাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে । আর পশ্চিমা বিশ্বের পরমবন্ধু সৌদি আরব যে পশ্চিমের একটি আয়না বা পুতুল; তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না ।

Powered by Blogger.