বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের উত্তরাধীকার সম্পর্কে কেবলাজানের বানীঃ
আমার পীর কেবলাজানের নির্দেশে জনাব মহসিন খান সাহেবের জৈষ্ট ভ্রাতার কন্যার সহিত আমার পরিণয় সম্পূর্ণ হয়। ইহা ছিল আমার দ্বিতীয় শাদী। কিন্তু বিবাহের ১২ বছর পরে এই সহধর্মিণী এন্তেকাল করেন। দ্বিতীয়া স্ত্রীর জীবদ্দশাতেই পীর কেবলাজানের বাতেনি নির্দেশে জনাব মহসীন খান সাহেবের অপর এক ভাইয়ের মেয়েকে বিবাহ করি। দীর্ঘ ত্রিশ বছর সত্য তরিকার একনিষ্ঠ খেদমত করিয়া আমার তৃতীয় স্ত্রী পরপারে চলে যায়।
বর্তমানে আমার সন্তানাদি পাঁচ জন।দুই ছেলে ও তিন
মেয়ে।ইহাদের মাঝে বড় দুই মেয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তান এবং দুই পুত্র ও
কনিষ্ঠা মেয়ে তৃতীয় স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তান।পুত্রদ্বয়ের মধ্যে জ্যৈষ্ঠের নাম
মাহফুজুল হক বাকিবিল্লাহ মোজাদ্দেদি এবং কনিষ্ঠের নাম মোস্তফা আমীর ফয়সাল
মোজাদ্দেদি।পুত্রদ্বয় বিবাহিত এবং কন্যাদ্বয়ও বিবাহিতা।তাহাদের সন্তানাদি আছে।
এখানে উদ্দেখ্য,পীর কেবলাজানের নির্দেশে এই আটরশি গ্রাম হইতে আমি আল্লাহ ও
রাসুলের সত্য তরিকার প্রচার শুরুকরি। প্রথমে যে জীর্ণকুটির হইতে তরিকার কার্য
শুরুকরি-তাহার নাম দেয়া হয়েছিল “জাকের ক্যাম্প” সময়ের ব্যবধানে আজ যাহা শান শওকতময়
“বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে”রুপ লাভ করেছে।
“জাকের ক্যাম্প” হইতে আজকের “বিশ্ব জাকের মঞ্জিল”-ইহা
প্রায় অর্ধশতাব্দীর নিরবিচ্ছিন্ন কায়িক পরিশ্রমের ফসল। লক্ষ লক্ষ রুহানি
সন্তান্দেরকে সঙ্গে করে,মাথার ঘাম পায়ে ফেলিয়া,দিবারাত্র কাজ করিয়া এই বিশ্ব জাকের
মঞ্জিল গড়িয়া তুলেছি। আমরা হেড লোডে মাটি কাটিয়াছি। জাকেরদেরে অক্লান্ত পরিশ্রমের
বিনিময় এই অসম্ভব সম্ভব হইয়াছে। এই বিশাল সম্পদ আমি সঙ্গে লইয়া আসি নাই।কেবলমাত্র
পীর কেবলাজানের হুকুম সম্বল করিয়া আটরশিতে আসিয়াছিলাম।পরবর্তীতে তদীয় জদমের অছিলায়
আল্লাহতায়ালা কোটি কোটি টাকার সম্পদ আমাকে দান করেছেন।আজ আমি অতীশয় বৃদ্ব।আমার বয়স
৮২/৮৩। কখন মহান খোদাতায়ালার ডাক আসিবে তাহা বলার উপায় নাই। আমি শূন্য হাতে
আসিয়াছিলাম। রিক্ত হস্তেই যাইতে মনস্ত করিয়াছি। মিসকিন হালতে আসিয়াছি,মিসকিন
হালতেই যাইতে চাই।
সেজন্যই আল্লাহতায়ালার অপূর্ব এই দান “বিশ্ব জাকের
মঞ্জিল” বিশ্বের মুসলমানের তীর্থস্থান হিসাবে, খোদাঅন্বেষীদের খোদাপ্রাপ্তির
প্লাটফর্ম হিসাবে রেজিস্ট্রিভুক্ত করিয়া ট্রাষ্ট করিয়া গেলাম। আমি ছিলাম খোদাতায়াল
রাস্তার মোসাফির।পীর কেবলাজান আমাকে বলিয়াছিলেন “তুই আল্লাহর রাহে মোসাফির”।আমিও
আমার অর্ধ শতাব্দীর পরিশ্রমের ফসল- “বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের” সমূদয় সম্পত্তি ট্রাষ্ট
করিয়া নিজ সন্তানদিগকে আল্লাহর রাহে মোসাফির করিয়া গেলাম।
তাহাদেরকে খোদাতায়ালার হাতে সোর্পদ করিলাম। আমার
অবর্তমানে আমার দুই ছেলেই(মাহফুজুল হক মুজাদ্দেদি ও মোস্তফা আমির ফয়সাল মুজাদ্দেদি
)হেদায়াতের দায়িত্ব পালন কবে।হেদায়তের মুল দায়িত্বে থাকিবে বড় ছেলের উপর।সে আমার
স্থালাভিষিক্ত হইবে। এই খানা শরীফ হইতে সত্য তরিকার প্রচার, খোদাতালাসীদের তালিম
প্রদান,জাকেরানদের দেখাশুনা করা,উপদেশ দেওয়া ইত্যাদি করিবে বড় ছেলে মাহফুযুল হক
মোজাদ্দেদি। আর জাকেরানদের নিয়ে সভা সমিতি করা,দেশের সর্বত্র এবং দেশের বাইরে তথা
বহির্বিশ্বে দয়াল নবীর সত্য তরিকার প্রচার এবং ট্রাষ্টের কার্যাবলী সম্পূর্ণ করার
দায়িত্ব থাকিবে ছোট ছেলে মোস্তফা আমির ফয়সাল মোজাদ্দেদির উপর। দুইজনের কর্মকান্ডই
মূলতঃএকই কাজের দুটি অংশ।
এইকাজ ইসলামের সত্য আদর্শ প্রচারের কাজ। আমার অবর্তমানে
তাহারা দুইজন পারস্পারিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এ কাজকে সম্মখে আগাইয়া নিবে।
এক্ষেত্রে একজন অপরজনের পরিপূরক।এক্ষেত্রে ছোট ছেলে বড় ছেলেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা
করবে এবং বড় ছেলে ছোট ছেলের উপদেষ্টা থাকিবে। দুই ছেলেকে যে দায়িত্ব দেওয়া হইল
তাহা পালনের যোগ্যতা ও গুণাগুন উভয়েরই আছে।তাহাদের উভয়েরই ইসলামীক জাহেরি ও বাতেনি
–উভয়ই জ্ঞান প্রদান করা হইয়েছে।
পরবর্তী সময় ছেলে দের অবর্তমানে আমার বংশের পুত্রগন
একইভাবে কাজ পরিচালনা করিবে।যদি কখনও আমার বংশে পুত্র সন্তান না থাকে,তবে জাকের
ফাউন্ডেশন কিভাবে চলিবে ,তাহা নির্ধারণ করিবেন তৎকালীন সরকার । শরিয়াতের বিধামতে
কোন কন্যা সন্তান এই আধ্যাত্নিক প্লাটফর্ম বা খোদাপ্রাপ্তিতত্ত্বজ্ঞান শিক্ষা
দানকেন্দ্রের দায়িত্ব গ্রহন করিতে পারিবে
না।
জীবনের শেষ প্রান্তে আসিয়া আমি সমুদয় জাকেরান ও
আশেকানদের আমার নির্দেশ জানাইয়া দিলাম।যাহারা আমার মুরিদ তাহারা কশ্মিনকালেও আমার
নির্দেশের বাহিরে যাইবে না ।তোমরা শরিয়াতের বিধান মত চলিবে। কখনও শরিয়াতের খেলাপ
কিছু করিবেনা।জাকের পার্টির শক্তি বৃদ্ধিতে সর্বদা প্রয়াস চালাইবে। যে দিক
নির্দেশনা দেওয়া হইল; যদি সেই অনুযায়ি চলিতে পার,তবে ইহকাল-পরকাল কোথাও ঠেকিবে না।
আল্লাহ তোমাদের দয়া করুন।
(আমিন)